শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩:৩৮ অপরাহ্ন

খবরের শিরোনাম:

তাহিরপুরে বোরোর বাম্পার ফলন, তীব্র গরমেও কৃষকের মুখে হাসি

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি,সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে বৃষ্টি না হওয়ায় তীব্র গরম আর রুক্ষ প্রকৃতির মাঝেও খুশি মনে সোনালি ফসল ঘরে তুলছেন হাওরের কৃষকরা। একমাত্র ফসল বোরো ধান রোদে শুকিয়ে গোলায় ভরতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সার্বক্ষণিক ধানের খলায় কাজ করছেন তারা। ফসলের বাম্পার ফলন হওয়ায় তীব্র গরমে কষ্টের মাঝেও খুশি তারা।

অন্যান্য বছর এমন সময় ঝড়-বৃষ্টি কারণে ফসল তুলতে বাধা সৃষ্টি হয়। এমনকি অতি বৃষ্টি বা শিলাবৃষ্টির কারণে নষ্ট হয়ে যেত সোনালি ফসল। পাহাড়ি ঢলের পানি নদী উপচে আঘাত হানত ফসল রক্ষা বাঁধে। বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কৃষক। কিন্তু এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গরম বেশি হলেও ঝড়-বৃষ্টি বা পাহাড়ি ঢলের পানি বাধা সৃষ্টি করতে পারেনি। এতে পুরো বৈশাখ আনন্দে পার করছে তারা।

জানা যায়, মে মাসের ৩ তারিখ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত হাওরাঞ্চলে শক্তিশালী কালবৈশাখী ঝড়, তীব্র বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি হওয়ায় আশঙ্কা রয়েছে। আগামী ৩ মের মধ্যে হাওরে ধান কাটা শেষ হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস।

তারা আরও জানায়, এ বছর উপজেলার ছোট-বড় ২৩টি হাওরে ১৭ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে হাওরে ১৩ হাজার ৪১৫ হেক্টর এবং এর বাইরে ৪ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ধান চাষাবাদ হয়েছে।

উপজেলার শনির, মাটিয়ান ও গুরুমাসহ বিভিন্ন হাওর ঘুরে কথা হয় বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে। তারা জানায়, রোদ আর গরমের ভয়ে এখন ঘরে বসে থাকলে সারা বছর না খেয়ে থাকতে হবে। আর এই একটা মাস কষ্ট করলে সারা বছর আরাম করা যাবে। আমরা এখন বৃষ্টি চাই না। আরও কয়েকটা দিন রোদ পেলে ধান কাটা ও শুকানো শেষ হয়ে যাবে। তখন বৃষ্টি হলেও চিন্তা নেই।

মাটিয়ান হাওরের কৃষক আলম মিয়া জানান, এ বছর ১০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে, ফলনও বেশ ভালো। এখন পর্যন্ত ৯ বিঘা জমির ধান গোলায় তুলতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। দু-এক দিনের ভিতরে বাকি ধান গোলায় তুলতে পারবেন। গরমে কষ্ট হলেও প্রত্যাশিত ফসল ঘরে তুলতে পারছেন। ঝড়বৃষ্টি না হওয়ায় ধান ও গরুর জন্য খড় শুকাতে সহজ হচ্ছে তাদের। বর্ষায় পরিবার নিয়ে শান্তিতে কাটাতে পারবেন এমন আশায় বুক বেঁধেছেন আলম মিয়াসহ হাওরাঞ্চলের কৃষকরা।

শনির হাওর পাড়ের কৃষক ইয়াছিন মিয়া জানান, এবার ফসল ভালো হয়েছে। দিন ভালো থাকায় হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে ধান কেটে মাড়াই করে খলায় আনতে পারছেন তারা। আবহাওয়া অতিরিক্ত গরম থাকলেও পর্যাপ্ত রোদ থাকায় ধান ও খড় শুকাতে সহজ হয়েছে। আগামী ৪-৫দিন ঝড়বৃষ্টি না হলে সব হাওরের ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাসান উদ-দৌলা জানান, উপজেলার সবকটি হাওরে প্রত্যাশিত ফসল উৎপাদন হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৮৮ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে। আগামী ৩ মের মধ্যে হাওরের ধান কাটা মোটামুটি শেষ হয়ে যাবে। ধান কাটায় কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.